গত ২৫ আগস্ট সেতুর নিচে গোমতী নদী থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষু বিকাশ চাকমার (৫০) লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভিটিতলা এলাকার ভারত চন্দ্র চাকমার ছেলে। ট্রেনের ধাক্কায় তিনি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়।
২৩ আগস্ট রেলসেতুর দক্ষিণাংশে ট্রেনে কাটা পড়ে জেলার সদর উপজেলার শাসনগাছা এলাকার মনিরুল হকের ছেলে স্বপ্নীল হক আদিত্য (১৩) এবং ধর্মপুর এলাকার সুবল রায়ের মেয়ে সেতু রায় (১৪) নিহত হন।
তার এক দিন আগে ২২ আগস্ট সেতুর কাছে থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। সেটিও ট্রেনের ধাক্কায় মারা যাওয়ার ধারণা করা হয়।
বনশুয়ার এ রেল সেতুটিতে ঘন ঘন দুর্ঘটনার জন্য বিভিন্ন কারণকে দায়ী করেছেন পুলিশ ও রেলওয়ে বিভাগ।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তারা বলেছেন, সেতুর কাছে গোমতি নদীর দু'পাশে অনেক কফিশপ তৈরি করা হয়েছে। ফলে এখানে মানুষ বেড়াতে আসে। কেউ সময় বাঁচাতে রেল সেতুর উপর দিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ মজা করার জন্য সেতুটি অতিক্রম করে।
রেলওয়ে ও পুলিশ সূত্র আরও জানায়, সেতুর দক্ষিণ দিকটি ৪৫ ডিগ্রি বাঁক এবং লাইনের পাশে গাছ ও ঝোপ-ঝাড় থাকায় ট্রেন আসলে দেখা যায় না। কুমিল্লা রেল স্টেশন দুই কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ট্রেনের গতিও বেশি থাকে। আবার সেতুর দু'পাশে দুটি সড়ক রয়েছে যা রেললাইনের এই সেতু দিয়ে পার হতে হয়। তবে সেখানেও কোন গেটম্যান নেই।
যোগাযোগ করা হলে কুমিল্লা রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মিজবাহুল আলম চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে তারা রেলওয়ে জেলা চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
কুমিল্লা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, রেল লাইন ও সেতু ধরে হাঁটা-চলা বেআইনি। তবে রেললাইনের পাশে বাজার, বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে, যার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, বানাশুয়ায় পুরানটিকে ভেঙে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হবে যার ওয়াকওয়ে হবে। ‘আমরা আশা করি, তখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটবে না।’